২ কোটি ৬৪ লাখ ১১ হাজার ১৪১ টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৭৯ লাখ ৫৭ হাজার ১৯৩ টাকা এবং গত ২৮ আগস্ট স্বামীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯৪৮ টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের পৃথক দুটি মামলা করা হয়।
দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আমির হোসাইন বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। নগরীর গোরহাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা কামরুজ্জামান মুকুল রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার জোতকার্তিক বিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক। তিনি রাজশাহী নিউ মার্কেট এলাকার সিটি পলিটেকনিক অ্যান্ড টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সিটি টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবেও কর্মরত। তার স্ত্রী মারুফা নগরীর রাজপাড়া থানা এলাকার আদর্শ মহিলা টেকনিক্যাল ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ।
দুদক জানায়, মারুফা খানম দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন, তার নামে ১ কোটি ৬৪ হাজার ৬২৫ টাকা মূল্যের স্থাবর ও ৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে তার ১ কোটি ৮ লাখ ১৮ হাজার ৬২৫ টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ এবং ১৯ লাখ ৫ হাজার ৫৬৪ টাকা ঋণ রয়েছে।
কিন্তু অনুসন্ধানকালে দুদক জানতে পারে, মারুফার নামে স্থাবর ১ কোটি ৬৪ হাজার ৬২৫ টাকার ও ৪ লাখ ৩০ হাজার ৫৩৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। মোট সম্পদ ১ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ১৬৩ টাকার। তার ঋণ পাওয়া যায় ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪১ টাকা। ঋণ বাদে মারুফা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩২২ টাকা।
অথচ তার বৈধ আয় পাওয়া যায় মোট ৯ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫৪ টাকা। তার পারিবারিক ব্যয় ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৫ টাকা। পারিবারিক ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদ ৮৯ লাখ ২ হাজার ৯৪৭ টাকা। ফলে তিনি অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৭৯ লাখ ৫৭ হাজার ১৯৩ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন।
এটি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে দুদক বাদী হয়ে মারুফা খানমের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে।
এদিকে, মারুফার স্বামী কামরুজ্জামান মুকুল ১ কোটি ৫১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। সেইসঙ্গে আয়বহির্ভূত ১ কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অনুসন্ধানে জানতে পারে দুদক। এজন্য তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন মারুফা ও তার স্বামী মুকুল। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ দম্পতি সনদ-বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মুকুলের বিরুদ্ধে করা দুদকের মামলায় সেটিও বলা হয়েছে। সম্প্রতি জোতকার্তিক গ্রামের একটি খুনের ঘটনায় আসামি হয়েছেন মুকুল। এরপর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
পাঠকের মতামত